Join Our Telegram Join now

জীবনের প্রবাহমানতা | জীবনবিজ্ঞান ও পরিবেশ | দশম শ্রেণি দ্বিতীয় অধ্যায় | Part-2

জীবনের প্রবাহমানতা | জীবনবিজ্ঞান ও পরিবেশ | দশম শ্রেণি দ্বিতীয় অধ্যায় সম্পূর্ণ নোটস | সমস্ত প্রশ্ন-উত্তর | Part-1

6. কোশ বিভাজন কয় প্রকার এবং কী কী?

উওর : কোষ বিভাজন প্রধানত তিন প্রকার।

যথা:-

১- অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন,

২- মাইটোসিস কোষ বিভাজন।

৩- মিয়োসিস কোষ বিভাজন।

·        অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজনঃ- যে প্রক্রিয়ায় বেম তন্তু গঠন ছাড়াই নিউক্লিয় পর্দার অবলুপ্তি না ঘটে কোষের নিউক্লিয়াস এবং সাইটোপ্লাজম সরাসরিভাবে বিভাজিত হয়ে দুই বা তার অধিক অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়, তাকে অ্যামাইটোসিস বা প্রথম কোষ বিভাজন বলা হয়। কিছু নিম্ন শ্রেণীর জীব যেমন- ব্যাকটেরিয়াঈস্ট ইত্যাদি কোষে এমাইটোসিস ঘটে।

গুরুত্ব- নিম্নশ্রেণির জীবদের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে।

·        মাইটোসিস বা সমবিভাজন কোষ বিভাজনঃ- যে প্রক্রিয়ায় দেহ মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস এবং সাইটোপ্লাজম বিভাজিত হয়ে সমসংখ্যম  ক্রোমোজোম বিশিষ্ঠ সমগুন সম্পন্ন দুটি নতুন অপত্য জীব সৃষ্টি হয়থাকে মাইটোসিস বলা হয়।

স্থান : উদ্ভিদের বর্ধনশীল অঙ্গে,অর্থাৎ ভাজক কলা এবং প্রাণীদের সমগ্র দেহে ও জ্বণের পরিস্ফুটন এর সময়।

গুরুত্ব:

 সদৃশ বিভাজন: মাইটোসিস পদ্ধতিতে উৎপন্ন নতুন অপত্য নিউক্লিয়াসটি মাতৃ নিউক্লিয়াসের মতো সম আকৃতি ও সমগুন সম্পন্ন।

 জীবের আকার ও আয়তন বৃদ্ধি : মাইটোসিস কোষ বিভাজনের ফলে দেহে নতুন অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়। যার ফলে জীব দেহের আকার ও আয়তন বৃদ্ধি পায়।

 ক্ষতস্থান পূরণ : মাইটোসিস কোষ বিভাজনের ফলে কোনো ক্ষতস্থান, নতুন কোষ এর মাধ্যমে পূরণ হয়।

 অযৌন জনন : মাইটোসিস প্রক্রিয়া এর মাধ্যমে নিম্নশ্রেণির এককোশী জীবরা তাদের অযৌন জনন সম্পন্ন করে। এবং এর মাধ্যমে তারা নিজেদের বংশবিস্তার করে।

 নিউক্লিয় - সাইটোপ্লাজমীয় অনুপাত বজায় রাখা: মাইটোসিস কোষ বিভাজন কোষে নিউক্লিয়াস এবং সাইটোপ্লাজম এর আয়তনের অনুপাত বজায় রাখে।


·        মিয়োসিস কোষ বিভাজনঃ-

 যে কোষ বিভাজন পদ্ধতিতে একটি জনন মাতৃকোষের নিউক্লিয়াস পরপর বিভাজিত হয়েজনন মাতৃকোষের অর্ধেক  ক্রোমোজোম বিশিষ্ট চারটি নতুন অপত্য কোষ সৃষ্টি করে,তাকে মিয়োসিস কোষ বিভাজন বলা হয়।

 স্থান : প্রধানত জীবের জনন মাতৃকোষ অর্থাৎ জীবের গ্যামেট গঠনকালে জনন

মাতৃকোষ এ ঘটে। উদ্ভিদ দেহের ডিম্বক, পরাগধানী ও স্পেরোনোজিয়াস।

গুরুত্ব :

  ক্রোমোজোম সংখ্যার হাস:- মিয়ােসিস পদ্ধতিতে উৎপন্ন অপত্য কোশের প্রতিটিতে ক্রোমোজোম সংখ্যা কমে গিয়ে জনন মাতৃকোশের অর্ধেক হয়ে যায়। যা জীবের প্রজাতির  ক্রোমোজোম সংখ্যা নির্দিষ্ট বা ধ্রুবক রাখার জন্য আবশ্যিক

 গ্যামেট উৎপাদন : মিয়ােসিসের কোষ বিভাজনের ফলে জনন মাতৃকোষ থেকে গ্যামেট উৎপাদন হয়। এই প্রক্রিয়াকে গ্যামেটোজেনেসিস বলা হয়।

 নতুন বৈশিষ্ট্যের সঞ্চার: মিয়োসিস কোষ বিভাজনের ফলে প্রজাতির মধ্যে নতুন বৈশিষ্ট্যের সঞ্চার হয়। যা আসলে জীব বৈচিত্রের প্রসার ঘটায় এবং জৈব অভিব্যক্তিতে সাহায্য করে।

 প্রকরণ:- মিয়োসিসের ফলে ক্রসিংওভারের সময় ক্রোমাটিডের অংশের বিনিময়। ঘটায় জিনের সজ্জা-বিন্যাস বা সজ্জা-প্রকরণেও পুনর্বিন্যাস ঘটেযার জন্য অপত্য জীবের মধ্যে নতুন বৈশিষ্ট্যের সৃষ্টি হয়। এই নতুন বৈশিষ্ট্য সঞ্চারনের ফলে - যে নতুন সৃষ্টি হওয়া জীবের মধ্যে যে অভিন্নতা দেখা যায়তাকে প্রকরন বলা হয়।

 

7. কোষ চক্র কাকে বলেকোশচক্রের বিভিন্ন দশা গুলি সম্পর্কে আলোচনা  করো। অথবা, কোষ চক্রের ইন্টারফেজ দশা কী কী ব্রাসায়নিক উপাদান সংশ্লেষিত হয়?

উওর : কোষের বৃদ্ধি ও বিভাজনের বিভিন্ন দশার চক্রাকার আবর্তনকে কোশচক্র বলা হয়।

 কোষ চক্রের বিভিন্ন দশা :- কোষ চক্রের প্রধানত দুটি দশা রয়েছে।

যথা :- ইন্টারফেজ দশা এবং মাইটোটিক ফেজ। ইন্টারফেজ দশা আবার, G1, S & G2 দশায় ও মাইটোটিক ফেজ ক্যারিওকাইনেসিস (প্রফেজমেটাফেজঅ্যানোফেজ এবং টেলোফেজ) ও সাইটোকাইনেসিস দশায় বিভক্ত।

·       • নিউক্লিয়াস বিভাজনকে ক্যারিওকাইনেসিস এবং সাইটোপ্লাজম বিভাজনকে সাইটোকাইনেসিস বলা হয়।

·        ইন্টারফেজ দশা:-

ইন্টারফেজ দশা
ইন্টারফেজ দশা


  ·        G1 বা Gap -1 বা প্রাক সংশ্লেষ দশা :

         এই দশা পূর্ববর্তী কোষ বিভাজনের শেষে ও উপদশার শেষে ঘটে।

      এই দশায় ডিএনএআরএনএউৎসেচকঅ্যামাইনো অ্যাসিডনিউক্লিওটাইড এবং ATP সংশ্লেষ ঘটে।

·    ·     সংশ্লেষ দশা বা দশা :

        G1 ও G2 উপদশার মধ্যবর্তী সময়ে ঘটে।

        এই দশায় DNA সংশ্লেষ ঘটে।

        এই দশায় হিস্টোন প্রোটিন সংশ্লেষিত হয়। যা DNA- এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিউক্লিওজোম গঠন করে।

·       ·  G2 বা GAP -2 বা সংশ্লেষ পরবর্তী দশা :-

 এটি উপদশা এবং মাইটোটিক দশার মধ্যবর্তী সময়ে ঘটে।

 এই দশায় ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনএ অনুর মেরামত হয়এবং কনডেনসন ঘটে।

 বিভিন্ন প্রকারের আয়নের যেমন মেসেঞ্জার আর.এন.এ.ট্রান্সফর্মার আর.এন.এ, রাইবোজোম আর,এন,এ ইত্যাদি সংশ্লেষ হয় এবং প্রোটিন সংশ্লেষণ ঘটে।

·        মাইটোটিক ফেজ-

মাইটোটিক ফেজ
মাইটোটিক ফেজ


 ক্যারিওকাইনেসিস : মাতৃকোষের একটি  ক্রোমোজোম দুটি সিস্টার ক্রোমাটিড এ বিভক্ত হয়ে, দুই মেরুতে এসে অবস্থান করে। ফলে মাতৃকোষে দুই মেরুতে সমসংখ্যক অপত্য ক্রোমোজোম বিশিষ্ঠ দুটি অপত্য নিউক্লিয়াস গঠিত হয়।

 সাইটোকাইনেসিস : অপত্য নিউক্লিয়াস সৃষ্টি হওয়ার পর কোশের বিষুব তলে কোশপাত (উদ্ভিদ কোশ) বা খাঁজ (প্রাণীকোশ) সৃষ্টির মাধ্যমে মাতৃকোশের সাইটোপ্লাজম বিভক্ত হয়। এবং দুটি অপত্য কোশ সৃষ্টি হয়।

Post a Comment

© Class 10. All rights reserved. Distributed by Pixabin